সিঙ্গুরের ডাকাত কালী
- সাবেকি ইতিহাস
- Nov 26, 2020
- 1 min read
Updated: Dec 22, 2020
কলকাতা থেকে ৩৯ কিমি দূরত্বে অবস্থিত সিঙ্গুরের বিখ্যাত ডাকাত কালী মন্দির। অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীতে সিঙ্গুর-হরিপাল অঞ্চল ডাকাতদের জন্য বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। এই অঞ্চলে দুর্ধর্ষ ডাকাত গগন সর্দারের দাপট ছিল মারাত্মক। এই স্থানের ডাকতে কালীর নিকট প্রতি অমাবস্যায় নরবলি দেওয়া হত।

কথিত আছে, মা সারদা একবার কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বর যাচ্ছিলেন অসুস্থ রামকৃষ্ণদেবকে দেখতে। পথে ডাকাতরা তাঁর পথ আটক করে, পরে সারদা মায়ের মুখে মা কালীর মুখের প্রতিচ্ছবি দেখে ডাকাতরা ক্ষমা চেয়ে মায়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং রাতে সারদা মা-কে ডাকাতদের ডেরায় আশ্রয় দেওয়া হয়। রাতে তাঁকে চাল ও কড়াই ভাজা খেতে দেওয়া হয়। সে কারণে কালীপুজোর সময় ভোগে অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে চাল ও কড়াই ভাজা দেওয়া হয়। সেই প্রথা এখনও চলে আসছে।

মল্লিকপুরে অবস্থিত এই ভয়ংকর বিরাট কালী মূর্তিটি ডাকতে কালী রূপেই পরিচিত। কালী মূর্তিটি প্রতিষ্ঠিত ও নিত্য পূজিত। প্রাথমিকভাবে ডাকাতরাই এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে, পরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে চালকেবাটির মোড়লরা এই মন্দির নির্মাণ করে দেন। সেই কারণেই কালীপুজোর দিন মোড়লদের পুজো আগে হয়। মন্দিরটি ঠিক কবে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা সঠিক ভাবে বলা যায় না। মন্দিরের কোন প্রতিষ্ঠাফলক নেই, তবে অনুমান করা যায় অষ্টাদশ শতাব্দীতেই সম্ভবত মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত, দক্ষিণমুখী, আটচালা মন্দির। গর্ভগৃহের সামনে ত্রিখিলান প্রবেশদ্বারযুক্ত অলিন্দ। মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের প্রবেশদ্বার একটাই। মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি নাটমন্দির এবং সমগ্র মন্দির চত্বর পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। একসময় মন্দিরের সামনের অংশটি টেরাকোটায় অলংকৃত ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেই টেরাকোটার খুব সামান্য অংশ অবশিষ্ট রয়েছে।

তথ্যসূত্র:
১) বিনয় ঘোষ: পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি, পুস্তক প্রকাশক, ১৯৫০ ২) সুধীর কুমার মিত্র: হুগলী জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ, তৃতীয় খন্ড, মন্ডল বুক হাউস, ১৯৬২ ৩) পিনাকী বিশ্বাস: বাংলার ডাকাতকালী, মিথ ও ইতিহাস, খড়ি প্রকাশনী, ২০২০
◾চিত্র সংগ্রহ: Google Images
মন্দিরের Google maps-এ অবস্থান: Singur, Purushottampur, Jamirberia, West Bengal 712409 098042 58087 https://maps.app.goo.gl/EhCEujzfJUyL1WDG7
コメント